সংবাদ২৪.নেট ডেস্ক : সুখী বিয়েই একটি সুখী পরিবারের সবচেয়ে গুরুতপূর্ণ পূর্বশর্ত। এজন্যে পাত্র এবং পাত্রী দু’পক্ষকেই জানতে হবে বিয়ের সঠিক কিছু দৃষ্টিভঙ্গি, মানতে হবে সহজ কিছু করণীয়।
১. ছোটবেলা থেকেই ছেলেসন্তানকে ঘরে বাইরে দুই জায়গার কাজে একটু একটু করে দায়িত্ব দিয়ে তাকে সাবলম্বী করে তুলুন। কারণ ঘরের কাজ মানে শুধু মেয়েদের কাজ এমন দৃষ্টিভঙ্গির ফলে ছেলেরা স্ত্রী, বোন, মেয়ে এবং মায়ের কাজকে মূল্যায়ন না করে অবজ্ঞা করতে শেখে।
২. ছেলের অপরাধকে প্রশ্রয় দেয়াও এক রকম অপরাধ এবং এই মানসিকতা ছেলেকে পরবর্তীতে আরো অপরাধ করার সুযোগ করে দেয়। তাই ছেলে কোনো অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরলে তার ভুলত্রুটি সংশোধনে সহযোগী হোন। বিনোদন ও বন্ধুত্বের নামে অপসংস্কৃতি, ড্রাগস, ক্লাব পার্টির সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন।
৩. পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে মেয়ে ফর্সা, সুন্দরী, কম বয়সী, মেয়ের বাবার গাড়ি, বাড়ি, ব্যাংক ব্যালেন্স এসব বিবেচনা না করে পাত্রী ভালো মানুষ কিনা বিবেচনা করুন। পাত্রীর পরিবারের সবরকম খোঁজ নিন। বিয়ের ব্যাপারে ছেলেকে চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা দিন।
৪. ছেলেকে ছোটবেলা থেকে নৈতিক শিক্ষা, পারিবারিক আদর্শ ও ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে বড় করে তুলুন। জীবনের লক্ষ্য সর্ম্পকে তাকে সুষ্পষ্ট ধারণা দিন।
৫. নারী অর্ধেক নয়— পরিপূরক মনে করলে পরিবারে পূর্ণ একাত্মতা আসে। তাই পরিবারে নারীর প্রতি সমমর্যাদা, সমমর্মী হওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলুন।
৬. বিয়ের সময় মেয়ে ছাড়া শ্বশুড়বাড়ি থেকে সুতো নেয়াও যৌতুক। যৌতুক নেয়া কাপুরুষতা। আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন প্রতিটি পুরুষের উচিত সসম্মানে তা ফিরিয়ে দেয়া।
৭. নিজের পরিবারের মতো স্ত্রীর পরিবারকেও একইরকম গুরুত্ব দিন, মনোযোগী হন। স্ত্রীর বাবা-মা, ভাই-বোনকে ভালবাসুন, শ্রদ্ধা করুন। কারণ স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পরিবারকে যথাযথ সম্মান, ভালবাসার মাধ্যমে পারিবারিক একাত্মতা বৃদ্ধি পায়।
৮. ছেলে সন্তান বংশের প্রদীপ—পরিবার গঠনে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে। ছেলে সন্তানের আশায় একাধিক সন্তান নেয়ার প্রবণতা থেকে বিরত থাকুন। ছেলে হোক মেয়ে হোক উভয়ই স্রষ্টার নেয়ামত বলে শোকরগুজার থাকুন।
৯.‘স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত’—এমন ধর্মীয় গোড়ামির দোহাই দিয়ে স্ত্রীর প্রতি সব বিষয়ে প্রাধান্য বিস্তার করবেন না। বরং স্ত্রীকে সহযোদ্ধা মনে করে তার গুণ ও মেধার বিকাশে সহযোগী হোন।
১০. পরিবারের আয় সম্পর্কে প্রথমেই মেয়েপক্ষকে সুষ্পষ্ট ধারণা দিন। এতে সমঝোতা বাড়বে। অযৌক্তিক প্রত্যাশাও কমে যাবে। বিয়ের পরে স্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার মতো যোগ্যতা এবং সৎ ইচ্ছা যদি ছেলের থাকে তবে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিন।
সুখী বিয়ের জন্যে করণীয় (মেয়ে পক্ষ)
সুখী বিয়েই একটি সুখী পরিবারের সবচেয়ে গুরুতপূর্ণ পূর্বশর্ত। এজন্যে পাত্র এবং পাত্রী দু’পক্ষকেই জানতে হবে বিয়ের সঠিক কিছু দৃষ্টিভঙ্গি, মানতে হবে সহজ কিছু করণীয়।
১. ছোটবেলা থেকেই কন্যাসন্তানকে আত্মপরিচয় সৃষ্টিতে উদ্বুদ্ধ করুন। বিয়ের আগে লেখাপড়া শেষ করে তাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে দিন।
২. আপনার মেয়ে যাতে সবসময় মনে করতে পারে যে আপনি তার পাশে আছেন। বিয়ের পর মেয়ে হয়ে যায় পরের, বাবার বাড়ির সঙ্গে আর তার সম্পর্ক রাখা যাবে না-এটা ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি। মেয়েরা শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হয় এ মানসিকতার কারণেই।
৩. মেয়ের বিয়ে হচ্ছে না বলে তাকে খোঁটা দেবেন না, কটু কথা শোনাবেন না। তার প্রতি সমমর্মিতা পোষণ করুন।
৪. বিয়েকেই তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হিসেবে তুলে ধরবেন না। শুধ চেহারা বা রূপসজ্জা নয়, তাকে তার মেধা বিকাশের জন্যে উৎসাহিত করুন। তাকে বোঝান রূপের প্রশংসা সাময়িক। গুণের কদর চিরন্তন। তাই গুণকে বিকশিত করুন।
৫. বিয়ের সিদ্ধান্তে তাড়াহুড়ো করবেন না। পাত্র/পাত্রী পক্ষের লৌকিক আচরণ দেখেই মুগ্ধ হবেন না। সব ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে তারপর সিদ্ধান্ত নিন। বিয়ে হওয়া উচিত সম-সামাজিক এবং সম-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। আর পরিচিত গণ্ডীতে হলে তা আরো ভালো।
৬. যৌতুক দেবেন না। অর্থের বিনিময়ে কখনো সুখ কেনা যায় না। অর্থ এমন একটি দুষ্টচক্র তৈরি করে যে, যত পাওয়া যায় তত এর অভাববোধ বাড়তে থাকে।
৭. নির্যাতন, অবহেলা, বিশ্বাসভঙ্গ বা অন্য কোনো গুরুতর কারণে যদি বিয়ে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয় তাহলে মেয়ের পাশে দাঁড়ান। সামাজিক নিন্দা বা পারিবারিক কলংক ইত্যাদি কারণ সামনে এনে বিয়ে টিকিয়ে রাখার জন্যে মেয়ের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করবেন না। বরং এসব ক্ষেত্রে বাচ্চা হওয়ার আগেই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া ভালো।
৮. একটা বাচ্চা হলে আপনার সংসারে শান্তি ফিরে আসবে, স্বামী ভালো হয়ে যাবে এ আশায় তাড়াহুড়ো করে সন্তান নেয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন না। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে সন্তান হওয়ার পর অশান্তি আরো বেড়ে গেছে এবং তখন বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া আরো কঠিন হয়ে গেছে। আর তাছাড়া পারিবারিক অশান্তির মধ্য দিয়ে যে শিশু জন্মায় বা বেড়ে ওঠে তার মানসিক ভারসাম্য সবসময়ই নড়বড়ে অবস্থায় থাকে।
এ সংক্রান্ত আরো খবর
- » এদেশে জঙ্গীবাদের কোন ঠাঁই হবে না
- » যুবসমাজের চাকরির জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকার প্রয়োজন নেই : জয়
- » টংগিবাড়ীতে কথিত সাংবাদিকের হয়রানীতে অতিষ্ট এলাকাবাসী : থানায় অভিযোগ, মানবন্ধন
- » পুরুষদের যে বিষয়গুলো আকর্ষণ করে মহিলাদের
- » অন্ধকারে থাকলে যৌন চাহিদা কমে!
- » যৌন মিলনের অভ্যেস ত্যাগ করলে শরীরে কী কী পরিবর্তন ঘটে?
- » ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ
- » মন্ত্রীসভা থেকে মতিয়া চৌধুরীর বরখাস্তের দাবী বঙ্গবীরের
- » আগ্রায় ভেঙে পড়ল তাজমহলের স্তম্ভ
- » আচরণবিধি তোয়াক্কা করছে না মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর!
- » ধর্ষণ করে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হল ৮ বছরের শিশুকে
- » বৈশাখে ইলিশ নয়, যা দিয়ে পান্তা ভাত খাবেন প্রধানমন্ত্রী
- » ভুল সেটে পরীক্ষা নেয়ায় ৪ কলেজকে কারণ দর্শানো নোটিশ
- » গাজীপুর সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন মহপরিকল্পনা জাহাঙ্গীরের
- » কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী